রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে ও সম্মানজনকভাবে তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমার ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মিয়ানমারের আবাসিক রাষ্ট্রদূত কাও সো মো রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর পরিচয়পত্র পেশকালে তার মাধ্যমে মিয়ানমার সরকারকে তিনি এ আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বিদ্যমান রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। আশা করি, জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত এসব জনগণ যাতে নিরাপদে ও সম্মানজনকভাবে তাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে মিয়ানমার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করবে। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয় বাংলাদেশ। নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় মিয়ানমারের সঙ্গে ভালো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখাকে অগ্রাধিকার দেয়। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, তাঁর দায়িত্ব পালনকালে দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে। উভয় দেশেরই অন্বেষণের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক রয়েছে এবং উভয় দেশেরই এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ আগামী সেপ্টেম্বরে বিমসটেক এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিমসটেক-কে শক্তিশালী করতে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ আসিয়ানের ডায়লগ পার্টনার হতে চায়। এই ব্যাপারে তিনি মিয়ানমারের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত ঢাকায় তার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তচ্যুতদের কারণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে তার দেশ কাজ করছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা তিনি তার সরকারকে জানাবেন এবং সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে, রাষ্ট্রদূত বঙ্গভবনে পৌঁছলে রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি অশ্বারোহী দল অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রদূতকে ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদান করে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সৌজন্য সাক্ষাৎ: এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, সাক্ষাৎকালে তাঁরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিকসহ সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, উচ্চশিক্ষা বিস্তারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের যোগ্য হিসেবে প্রমাণ করতে পারে সেই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার মান উন্নয়নেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির
- আপলোড সময় : ০৫-০৭-২০২৪ ০৩:২৫:৫১ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৫-০৭-২০২৪ ০৪:০২:৫৪ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ